Agarbatti Business Plan – এখন অনেকেই এরকম আছেন যারা কোনো চাকরি করতে চান না বরং চান নিজের পায়ে দাঁড়াতে নিজের একটি ব্যবসা শুরু করতে, যার সাহায্যে তারা তাদের পরিবারকে সাহায্য করতে পারবেন। আজ আমরা এরকম একটি ব্যবসার খোঁজ দেবো যার চাহিদা সারাবছর রয়েছে। এটি শুরু করলে আপনি সারা বছর কিছু না কিছু কামাই করবেন। সমস্ত জাতির মানুষেরাই এটি কিনে থাকেন তাদের দিনের শুরুই হয় এই জিনিস দিয়ে।
ভাবছেন তো এটি কোন ব্যবসা তাহলে জানিয়ে দিই এই ব্যবসাটি হল আগরবাতির ব্যবসা। এটি যেমন প্রতিদিন দিন সরকার ঠিক তেমনি যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয়। এছাড়াও এটিকে অনেকে রিল্যাক্সেশন বা ধ্যানের জন্যও ব্যবহার করেন। ঘর, অফিস, দোকান, যোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা স্পা সব জায়গায়ই এটি ব্যবহার করা হয়। এরজন্যই আগরবাতির ব্যবসা একটি লাভজনক ও স্থায়ী ব্যবসায়িক ধারণা।
এই ব্যবসা শুরু করতে হলে কী কী করতে হবে ?
এই ব্যবসাটি শুরু করতে হলে অনেক টাকারও প্রয়োজন। আপনি ২৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ খরচ করেই ঘরে বসে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এরজন্য আপনার দরকার একটি ছোট ঘরের বা ছোট জায়গার, কিছু কাঁচামাল,একটি ম্যানুয়াল বা সেমি-অটোমেটিক আগরবাতি তৈরির মেশিন। এছাড়াও লাগবে বাঁশের কাঠি, আগরবাতির গুঁড়া (কয়লার গুঁড়া, কাঠের ধুলো ইত্যাদি), পারফিউম বা সুগন্ধি তেল লাগবে,রঙ বা ডাই (ঐচ্ছিক)।
ইন্ডিয়ান মার্ট বা লোকাল লোকাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল মার্কেট থেকে যদি আপনি একটি ম্যানুয়াল আগরবাতি মেশিন কিনতে চান তাহলে আপনি ₹১০,০০০–₹১৫,০০০ টাকার এর মধ্যে সেটি পেয়ে যাবেন। অন্যদিকে যদি সেমি-অটোমেটিক মেশিন কিনতে চান তাহলে আপনার খরচ পড়বে ₹২০,০০০–₹২৫,০০০ টাকা। এর পাশাপাশি ৫০ কেজি পাউডার, ২৫,০০০ কাঠি, সুগন্ধি ও কিছু প্যাকেট কিনলে আপনার খরচ পড়বে ₹৩০,০০০–₹৪০,০০০ টাকা।
কীভাবে বানাতে হয় আগরবাতি ?
আগরবাতি তৈরির প্রক্রিয়া খুবই সহজ। প্রথমে কাঠির ওপরে মেশানো গুঁড়া মেশিনের সাহায্যে লাগানো হয়। সেটি লাগানো হয়ে গেলে সেটিকে রোদে শুকোতে দিতে হয়। সেটি শুকিয়ে গেলে নিজের পছন্দমতো সুগন্ধি স্প্রে দিয়ে সেটিকে প্যাক করে নিতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি শিখতে ২-৩ দিন লাগে।
আপনি যদি প্রতিদিন ৫ ঘণ্টায় ১০,০০০ আগরবাতি তৈরি করেন, এক কেজিতে প্রায় ১,০০০ টি আগরবাতি থাকে।এতে ১০ কেজি উৎপাদন হয়। আপনি যদি মাসে ২৫ দিন কাজ করেন তাহলে মোট ২.৫ লাখ আগরবাতি উৎপাদন হবে। বাজারে এখন আগরবাতির পাইকারি দাম ৮০-১০০ টাকা। এতে আপনার মাসিক আয় হবে ২০,০০০-৩৫,০০০। যদি আপনি এর ব্র্যান্ডিং ও অনলাইন বিক্রি করেন তাহলে আপনার আয় আরো দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।
এখন প্রশ্ন হল এগুলোকে কোথায় কোথায় বিক্রি করবেন। আপনি যখন প্রথম প্রথম এই ব্যবসার শুরু করবেন তখন আপনাকে প্রথমে বাজার গড়তে হবে। তাই লোকাল খুচরা ও পাইকারি দোকানদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়াও মন্দির, পূজার সামগ্রী বিক্রি করা দোকান, অন্যান্য দোকানের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে হবে। এর পাশাপাশি আপনার ব্র্যান্ড তৈরি করে অনলাইনেও বিক্রি করতে পারেন। Amazon, Flipkart, Meesho,Instagram, Facebook Page, WhatsApp Business এগুলোতে অনলাইন বিক্রি করতে পারেন।
ছুটি প্রেমীদের জন্য সুখবর! আগস্টে আসছে লম্বা ছুটির তালিকা জেনে নিন
আপনি যদি আগরবাতি বানানো শিখতে চান তাহলে ইউটিউব ভিডিও দেখে শিখতে পারেন। এছাড়াও এনএসআইসি (NSIC), খাদি গ্রাম উদ্যোগ, ডিস্ট্রিক্ট ইন্ডাস্ট্রি সেন্টার ইত্যাদি সংস্থা বিনামূল্যে বা খুব কম খরচে আগরবাতি বানানোর প্রশিক্ষণ দেয় সেখানেও শিখতে পারেন। ই ধরণের সংস্থাগুলো অনেক সময় প্রজেক্ট রিপোর্টও সরবরাহ করে দেয় এতে আপনি ব্যাংক থেকে সহজেই লোন পাওয়া যায়।
এই ব্যবসাটি মূলত গৃহিণীদের জন্য যারা বাড়ির কাজের মাঝে ব্যবসা করতে চান। এটি নারী আত্মনির্ভর একটি ব্যবসা।এছাড়াও এটি চাতর ছাত্রীরাও করতে পারেন তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি। এটি যেহেতু অল্প সময়ে শেখা যায়, ইনভেস্টমেন্টও কম এবং আয়ও ভালো হয়।
আপনি যদি গ্রামে থাকেন তাহলে এটি আপনার জন্য খুবই সহজ একটি ব্যবসা কারণ গ্রামে কাঁচামাল খুব সহজেই পাওয়া যায় ও এটির মজুরিও কম। এতে প্রতিযোগিতাও খুব এলজম তাই আপনার ব্যবসা খুব সহজেই গড়ে উঠবে।
এটি ছোট শহরেও শুরু করা যায় যদি ছোট কোন ঘর বিএ গ্যারেজ থাকে। এভাহরাও নিজের পণ্যের একটি লেভেল, প্যাকেজিং, ও ইউনিক ঘ্রাণ ব্যবহার করেন তাহলেও আপনার ব্যবসা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। শুধু তাই নয় ব্র্যান্ডের নাম নিয়ে বিক্রি করলে যেকোনো পণ্যের মূল্য বাড়ে এবং গ্রাহকের ভরসা বেড়ে যায়।
নিজের আয় কীভাবে বাড়াবেন ?
- প্রথমে নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করার জন্য আপনাকে বাজারে নামতে হবে।
- তারপর নতুন ঘ্রাণ ও প্যাকেট ডিজাইন যুক্ত করতে হবে।
- এছাড়াও অনলাইন রিভিউ ও কাস্টমার ফিডব্যাক সংগ্রহ করতে পারবে।
- লোকাল রিটেইলারদের ইনসেন্টিভ দিতে হবে বেশি বিক্রি।করার জন্য।
এই ব্যবসাটি হল খুব সহজ, সাশ্রয়ী ও লাভজনক ব্যবসা যেটি যেকোনো বয়সী মানুষ ঘরে বসেই করতে পারেন। এটিতে ২৫,০০০-৩০,০০০ টাকা খরচ করে মাসে ৩০,০০০-৪০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এতে পরিশ্রম ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করতে হবে।যদি এই ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।
আগামী মাস থেকে বদল UPI-তে! নিয়মে আসছে পরিবর্তন, জেনে নিন আগে থেকেই